বলরাম দাশ অনুপম 

২০০৩ সালের মে মাসের কথা। তখন আমি সবে মাত্র এসএসসিতে পাশ করে এইচএসসিতে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখার জন্য কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীর পাড়ে একজন হকার থেকে একটি পত্রিকা কিনলাম। সেই পত্রিকার নাম দৈনিক কক্সবাজার। পত্রিকা কেনার পর দৈনিক কক্সবাজারের সাহিত্য পাতা ঝিকিমিকির একজন সদস্য হয়ে গেলাম।

আজ আমিও একজন সংবাদকর্মী। কিন্তু ২০০৩ সাল থেকে প্রায় ১৮ বছর ধরে দৈনিক কক্সবাজারের একজন পাঠক হিসেবে আমার সর্ম্পক। পত্রিকাটি ৪ জুন ৩ দশকে পা রেখেছে। পূরণ করেছে ৩১ বছর। পাবলিক লাইব্রেরী মার্কেটে পত্রিকাটি অফিস থাকাকালীন থেকে কখনো কবিতা-প্রবন্ধ, কখনো সংগঠনের নিউজ আবার কখনো বিজ্ঞাপন নিয়ে যাওয়া হত আমার। সে থেকে একে একে পরিচিত হয় কক্সবাজারের সংবাদপত্র জগতকে।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিচিত করার জন্য যে মানুষটি দৈনিক কক্সবাজার নামের একটি নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ট ও সর্বস্তরের মানুষের মূখপাত্র হিসেবে পত্রিকা প্রকাশ করেছেন সেই মুরব্বী শ্রদ্ধেয় আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের সাথে। পাঞ্জাবী আর মুজিব কোট পরে প্রতিনিয়ত পত্রিকা অফিসে বসে থাকতেন সকলের শ্রদ্ধার পাত্র আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। পত্রিকা অফিসে গেলে মাঝে-মধ্যে চাচার সাথে কথা বলতাম, ভালই লাগতো। এরপর দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকার মাধ্যমে যখন আমি সাংবাদিকতা শুরু করি তখন থেকে এই পত্রিকার বর্তমান পরিচালনা সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম ও বর্তমান বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ নজিবুল ইসলামসহ সকলের সাথে আমার ঘনিষ্টতা বেড়ে যায়। তারা সবাই ছোট হিসেবে আমাকে স্নেহ করেন।

দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় কোন একটি লেখা, ফিচার কিংবা অন্য কিছু নিয়ে গেলে তাঁরা সকলে নানা পরামর্শ আমাকে দিতেন। শুধু দৈনিক কক্সবাজার কক্সবাজার জেলায় নয়, জেলা ছাড়িয়ে আশ-পাশের জেলা ও উপজেলা বিশেষ করে নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলিকদম, লোহাগাড়া এমনকি বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে প্রাচীনতম এবং কক্সবাজারের সর্বপ্রথম দৈনিক এই পত্রিকাটি। হাজার হাজার পাঠকের হৃদয়ে করে নিয়েছেন নিজেদের সম্মানজনক স্থান। এই পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করে অনেক সাংবাদিক ইতোমধ্যে প্রথম সারির বেশ কয়েকটি জাতীয়-আঞ্চলিক পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিনিধি হয়েছেন। আর তা সম্ভব হয়েছে যার মনেপ্রাণে সাংবাদিকতার নামটি ছিল সেই মহান ব্যক্তি সাদা মনের মানুষ সবার প্রিয় আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম সাহেবের কারণে।

সবমিলিয়ে দৈনিক কক্সবাজার আজ সকল দল, মতের উর্দ্ধে উঠে জেলাবাসীর নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ট মূখপাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে। যার প্রমাণ মিলেছে প্রতিবছর পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শত শত মানুষের ঢল আর দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হওয়ার মাধ্যমে। হয়তো বা করোনা মহামারির কারণে এবছর তা সম্ভব হচ্ছে না। জানা যায়-১৯৩৮ সালের ৬ জুন কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে জন্ম নেয়া আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বর্তমানে কিছুটা অসুস্থ।

পরিশেষে এটাই বলবো আসুন আমরা সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যাতে করে এই মহান মানুষটি আমাদের মাঝে আরো বহুদিন বেঁচে থাকার মাধ্যমে যাতে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার ছায়া হয়ে থাকেন। যাতে করে আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম সাহেবের ছায়ার নিচে থেকে অতীতের ন্যায় আগামী দিনেও নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার বীজ রোপন হয়। আমার এই ক্ষুদ্র লেখায় ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

লেখক: সংবাদকর্মী, মোবাইল : ০১৮১৮-২০৫৭৬৩; ই-মেইল : balaram.cox@gmail.com